#সংক্ষিপ্ত_বিবরণঃ–
একদিন মহেন্দ্র’র কাকীমা অন্নপূর্ণা এসে তাঁর এক ভাগ্নী’র(আশালতা) কথা বললো মহেন্দ্রকে। কিন্তু মহেন্দ্র তাতে ভ্রুক্ষেপ করলো না তখন অন্নপূর্ণা গিয়ে বিহারীকে ধরল। বিহারী রাজি হলো মেয়েকে দেখতে যেতে। একদিন মহেন্দ্র আর বিহারী গেল মেয়ে দেখতে। মেয়ের নাম আশালতা, ডাকনাম চুনি। গিয়ে তো মহেন্দ্র’র নিজেরই পছন্দ হয়ে গেল। শেষমেশ অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে মহেন্দ্র’র সাথে আশা’র(আশালতা) বিয়ে হলো। কিন্তু এই বিয়ে মহেন্দ্র’র মা রাজলক্ষ্মী সহজভাবে নিতে পারলো না। সে আশালতার সাথে দাসীর মতো ব্যবহার করতে লাগলো। আশাকে দিয়ে সারাদিন ঘরকন্না’র কাজ-বাজ করাতে লাগলো। কিন্তু এসব দেখে মহেন্দ্র’র সহ্য হলো না। নতুন বউকে দিয়ে এসব কেন করাবে? তাই মহেন্দ্র তাঁর মায়ের সাথে ঝগড়া করে বউকে নিয়ে আসলো পড়ালেখা করাবে বলে। কিন্তু পড়ালেখা আর হলোনা। নতুন প্রেমে উভয়ই এমন মজলো যে তা আর রাজলক্ষ্মীর সহ্য হলো না। তাই রাজলক্ষ্মী অনুরাগে বাপের বাড়ি যাবার উদ্যোগ নিল। সেখানে গিয়ে রাজলক্ষ্মী, বিনোদিনীর বাড়িতে আশ্রয় নিল। ইতঃমধ্যে অনেকদিন কেটে গেল কিন্তু রাজলক্ষ্মী ফিরে এল না। তখন অন্নপূর্ণা গিয়ে রাজলক্ষ্মীকে বাড়িতে এনে নিজে(অন্নপূর্ণা) কাশী যাবে বলে ঠিক করল। রাজলক্ষ্মীর সাথে করে বিনোদিনীকে নিয়ে আসল। বিনোদিনী বাড়ির লোকেদের মতোই কাজ-বাজ করতে লাগলো আর ওদিকে মহেন্দ্র তো আশাকে নিয়েই আছে। আস্তে আস্তে আশারও একটু একটু ভাব হলো বিনোদিনীর সাথে। আশা তাঁকে বালি(চোখের বালি) বলে ডাকে। আশার সাথে ভাব হলেও মহেন্দ্র বরাবরের মতোই বিনোদিনীকে উপেক্ষা করলে লাগলো। মহেন্দ্র এমন করতো যেন বিনোদিনীকে সে পছন্দই করে না। আশা অনেক বুঝিয়ে-সুজিয়ে মহেন্দ্রকে রাজি করালো বিনোদিনীর সাথে প্রথমবার কথা বলবার জন্য। প্রথমদিন একটু কথা হলো, পরেরদিন আরেকটু, এভাবে করতে করতে তিনজনের মধ্যে গভীর অন্তরঙ্গতা শুরু হলো। এর মধ্যে একদিন বিহারী এসে এসব দেখে বুঝতে পারলো জল কোন দিকে গড়াচ্ছে। তাই সে মহেন্দ্রর মা রাজলক্ষ্মীকে বললো বিনোদিনীকে তাঁর বাড়িতে রেখে আসবার জন্য। কিন্তু মহেন্দ্র আকুপাকু করাতে বিনোদিনীর আর যাওয়া হলো না। অনৈতিক বিষবৃক্ষের বীজ উপ্ত হলো এখানেই৷ বিনোদিনী অবশ্য একটু বেজার হয়েছিলো চলে যাবার কথা বলাতে তাই মহেন্দ্র সেটা বুঝতে পেরে একটু আমোদ-প্রমোদের ব্যবস্থা করলো। ঠিক করলো তাঁরা চড়ুইভাতি করতে যাবে পুরনো দমদমের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে সবাই আনন্দে মেতে উঠল। কিন্তু ফিরে আসাতেই আবার অশুভ সংকেত! রাজলক্ষ্মী অসুখে পড়ল। ভয়ঙ্কর রকমের ইনফ্লুয়েঞ্জা। বিনোদিনী অনেক আদর-যত্ন করে রাজলক্ষ্মীকে সুস্থ করে তুলল। কিন্তু মহেন্দ্র খেয়াল করে দেখলো যে ইদানীং বিনোদিনী তাঁকে উপেক্ষা করতেছে। ঘটনাটা ভালোভাবে বুঝবার জন্য সে কলেজের এক্সাম পড়ে গেছে এটা বলে বাড়ি থেকে চলে যাবার পরিকল্পনা করল যাতে বিনোদিনী অনুভব করে মহেন্দ্রকে। কিন্তু এটা শুনে আশার মনে হল সে যেন মহেন্দ্রকে চিরতরে হারাচ্ছে। অনেক বুঝিয়ে মহেন্দ্র শেষে হোস্টেলে গেল। দিনকতক পরে বিনোদিনী চিঠি লিখলো মহেন্দ্রকে। চিঠি পেয়ে মহেন্দ্র বাড়িতে ফিরে আসলো। আবার পুরনো সম্পর্ক গড়ে উঠল আর চলতে লাগলো এভাবেই৷ এর কিছুপর পরে মহেন্দ্র বললো সে কাশী যাবে তাঁর কাকীমা অন্নপূর্ণাকে দেখতে। যে কথা সেই কাজ। মহেন্দ্র বেশ কয়েকদিন থেকে আসলো কাশীতে এরপর বাড়ি ফিরে আসলো। তখন আবার আশা বললো সে কাশী যাবে কাকীমা অন্নপূর্ণাকে দেখতে। মহেন্দ্রও চাচ্ছিলো আশা তাঁর থেকে একটু দূরে যাক কিছুদিনের জন্য যাতে সে বিনোদিনী’কে কাছে পেতে পারে।
#গুরুত্বপূর্ণ_লাইনঃ–