Book Name: Iskcon Books in bengali pdf free download link:
srimad-bhagavatam in bengali pdf free download
আরও পড়ুনঃ
বই – আদর্শ হিন্দু হোটেল
লেখক – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ধরন – উপন্যাস
পটভূমি – বঙ্গ
প্রকাশিত – ১৯৪০
প্রকাশনী – প্রিয়মুখ
পেইজ সংখ্যা – ১৬০ পৃষ্ঠা
প্রচ্ছদ মূল্য – ৩০০ টাকা
কিছু কথাঃ
মানুষ কখন বুড়ো হয় জানেন?
মানুষ বুড়ো হয়ে উঠে তখন; যখন তারা স্বপ্ন দেখা বন্ধ করে দেয়। তাদের জীবন থেকে উত্তম আশা-ভরসা শেষ হয়ে যায়, যাদের জীবনে পূরণ করার মতো কোনো স্বপ্ন নেই তাদের জীবন বড়ই কষ্টকর আবার একদল মানুষের চোখে স্বপ্ন খেলা করে, তীব্র আকাঙ্ক্ষা আত্মবিশ্বাস নিয়ে ছুটে চলে তার স্বপ্নের পথে তখন তার শক্তি এসে ভর করে তার শরীরে।
তেমনি এক স্বপ্নবাজ মানুষকে নিয়ে লেখা আদর্শ হিন্দু হোটেল।
উপন্যাসটি পড়ার আগে আপনাকে অনুরোধ করবো কল্পনায় নিজেকে টাইম মেশিনে নিয়ে নিজের চিন্তাধারাকে কয়েক বছর পিছিয়ে নিয়ে পড়া শুরু করুন। তাহলে সব কিছু অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখতে পারবেন।
চরিত্রঃ
* হাজারি ঠাকুর – রসুইয়ে বামন (রাধুনী) কিন্তু স্বপ্ন তার
আকাশ ছোয়া।
* বেচু চকোত্তি- রানাঘাটের হোটেলের মালিক।
* পদ্ম ঝি – বেচু চকোত্তির ডান হাত। কোন এক অজানা
কারনে তার কথা ফেলতে পারেনা চকোত্তি
মশায়।
* কুসুম – হাজারী ঠাকুরের গায়ের মেয়ে। হাজারীর
সাথে তার বাপ মেয়ের সম্পর্ক। হোটেলের
রাধা খাবার মাঝে মাঝে নিজে না খেয়ে
কুসুমের জন্য নিয়ে যায় সে ।
* অতসী – গায়ের সাহেবের মেয়ে, নরম মনের। হাজারী
ঠাকুরের রান্নার ভক্ত।
* অন্যন্ন – বংশি, নরেন, হাজারির মেয়ে টেপি প্রমুখ।
পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার এক শহর নাম রানাঘাট। রানাঘাট রেল বাজারের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে দুটি হোটেল একটি বেচু চকোত্তির আন্যটি যদু বাড়ুয্যের আদি হিন্দু হোটেল। হাজারী ঠাকুর চাকরীর উদ্দেশ্যে গ্রাম ছেড়ে শহরে আসে, সাত টাকা মাইনে দুবেলা খাওয়া আর বছরে দুখানা কাপড়ের চুক্তিতে চাকরী নেয় বেঁচু চক্রবর্তীর হোটেলে। হোটেলটি খানিকটা এরকম, ঢুকতেই বাম হাতে গদির ঘর, তারপর খাবার ঘর। সেখানে আছে তিন ধরনের মিলের ব্যবস্থা। ফার্স্ট ক্লাস, সেকেন্ড ক্লাস ও থার্ড ক্লাস। হোটেলের রান্না শুরু হয় ভোর থেকেই। প্রথমে দুধ তারপর ভাতের জল, বড় ডেকচিতে ডাল, বাজার থেকে আসা সবজী, মাছ।গদিতে টিকিট কেটে খাবার ঘরে ঢোকার ব্যবস্থা। খাবার ঘরের ঠিক পেছনে রান্নার জায়গা। স্টেশনে ট্রেন আসলে শুরু হয়ে যায় খদ্দের ধরার প্রতিযোগিতা, একে অন্যের আগে খদ্দেরদের বগলদাবা করার জন্য উচ্চস্বরে হাঁকতে থাকে আসুন বাবু গরম ভাত, মাছের ঝোল তরকারি, ভাত, হিন্দু হোটেল বাবু।
তবে তাদের বেশিরভাগই কিন্তু আসে বেচু চকোত্তির হোটেলে। হোটেলের জন্য নয় বরং আসে হোটেলের রাঁধুনি হাজারি ঠাকুরের হাতের রান্না খাওয়ার জন্য। তার রান্নার প্রশংসায় কাস্টমার পঞ্চমুখ থাকলেও বেচু চকোত্তি আর পদ্ম ঝি তাকে সবসময় তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেই চলে। বিশেষত তার এই সুনাম যে সূদুর কলকাতা অব্দি চলে গেছে এইটে সহ্য হয়না পদ্ম ঝিয়ের। সে সব সময় নিচু চোখেই দেখে হাজারীকে এছাড়াও তার আরো কিছু বদ গুন ছিল, যেমন চুরি বিদ্যা ও মিথ্যা বলা। বেশির ভাগ সময়ই তার মিথ্যা চাপা পড়ে যেত তার বাজখায়ি গলার আওয়াজে।
মিথ্যে চুরির অপবাদে হাজারী ঠাকুরকে চাকুরিচ্যুত করে পদ্মঝি, বেকারত্বের বোঝ নিয়ে যাযাবরের মত বেশ কিছুদিন এ গ্রাম সে গ্রাম ঘুরে অবশেষে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে রান্নার ঠাকুরের কাজ নেয় হাজারী। খুব অল্প দিনেই হাজারী, রান্নার গুনে বাড়ির মেয়ে বউ দের বড় প্রিয় হয়ে ওঠেন। কিন্তু সে গ্রামে তার মন টিকতে চায়না। মন পড়ে রয় সেই বেচু চক্রবর্তীর হোটেলে। তার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়নি একসময় অতসী, কুসুমের থেকে টাকা ধার করে নিজেই খুলে ফেলে একটি হোটেল। নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কঠোর পরিশ্রম করে। মাত্র এক বছরের মধ্যে তার হোটেলটি জনপ্রিয় হোটেলে পরিণত হয়। অন্য দুটি হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে সরকার পরিচালিত একটি হোটেল পরিচালনা করতে হাজারি রেলওয়ের টেন্ডারও পায়। উপন্যাসের শেষে হাজারি একটি বড় হোটেল পরিচালনা করার জন্য একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে এবং বোম্বাই যায়। যাওয়ার আগে, সে বেচু চক্রবর্তীকে তার হোটেলটির পরিচালক হিসাবে নিয়োগ করে। সে পদ্মকেও একটি চাকরি দেয়; যারা তাকে আগে অপমান করতো। চাকরীর উদ্দেশ্যে বেরোনোর ঠিক আগে পদ্ম ঝি হটাৎ হাজারী ঠাকুর কে প্রণাম করে, সকলের স্বজল চোখ ও আকুতি এড়িয়ে গেলেও পদ্ম ঝির এই আচরণ যেন হাজারীর মনে সর্ব প্রাপ্তির ভাব এনে দেয়।
প্রতিক্রিয়া
* দারিদ্রতা কখনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
* নিজের সৎ ইচ্ছা থাকলে কোন ব্যক্তির বাঁধা, উপেক্ষা
কখনোই নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। নিজের
লক্ষ্য স্থির রাখতে হবে।
* নিজের উপর বিশ্বাস এবং নিজেকে বিশুদ্ধ রাখতে
পারলেই সফলতা আসবে।
* নিজে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
* কারো প্রতি রাগ বা খারাপ ধারণা রাখা যাবেনা সে
যতই আপনার খারাপ বা অনিষ্ট করুক না কেন,
ক্ষমা করার মহৎ গুন থাকতে হবে।
অভিযোজনঃ
* ১৯৫৭ সালে এই উপন্যাস অবলম্বনে একই নামে
একটি বাংলা চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।
* কলকাতার রানাঘাটে এখনও “একটি আদর্শ হিন্দু
হোটেল” নামে হোটেলটি চালু আছে।
ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন,
ধন্যবাদ।