[দ্বীনে ফেরার গল্প ০১]
“একদিন আমি আমার দোকানে দেখলাম দুইজন মহিলা সারা শরীর কালো বোরখায় ঢেকে আমার দোকানে এসেছে। মুসলিম! তাও আবার আমার দোকানে! আমি চিৎকার করে উঠলাম। আমি নিজের ভেতর শক্তি চাচ্ছিলাম, যাতে তাদের ঘাড় দুটো গিয়ে ভেঙে দিতে পারি”।
রিচার্ড ম্যাকেনি। এই মানুষটা তার যৌবনে মুসলিমদের সবচেয়ে ঘৃণা করতো। এমনকি উনি এটাও বলেছেন যে, জীবনের একটা পর্যায়ে ইসলামের প্রতি ঘৃণাই তাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলো! অর্থাৎ, তার সকল চিন্তা-চেতনা জুড়ে ছিলো ইসলাম বিদ্বেষ আর মুসলিমদের প্রতি আক্রোশ।
ছোটবেলায় অ্যাকশন, মারামারির মুভি দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন আর্মিতে যোগ দিতে। আর্মি থেকে রিটায়ার করার পর নিজের এলাকার ইসলামিক সেন্টার বোমা দিয়ে ধ্বংস করে দেয়ার পরিকল্পনা করেন। এজন্য তিনি নিজের হাতে একটা বোমা বানান। তার পরিকল্পনা ছিলো ২০০ জন মানুষ নিহত অথবা আহত হবে। এটাই ছিলো তার কাছে দেশের সেবা।
এই পরিকল্পনা যখন তার মাথায়, তখন একটা ঘটনা ঘটে। তার ক্লাস টু তে পড়া মেয়ে যখন তার এক মুসলিম বন্ধুর মায়ের বোরখা পরা পোশাকের বর্ণনা দিচ্ছিলো তখন তিনি খুব উত্তেজিত হয়ে যান। তিনি এমন সব কথা বলা শুরু করেন, যেগুলো তার মেয়ের সামনে বলা একেবারেই উচিত ছিলো না। তার মেয়ের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিলো? সেই মূহুর্তের কথা তিনি বলছেন এভাবে-
“সেই সময়টাতে আমার মেয়ে কিছুই বলেনি আমাকে। এটা ছিলো তার মুখের চাহনি, যেটা দেখে মনে হচ্ছিলো আমি এই পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য মানুষ।…আমি ঠিক করলাম, আমি এই মুসলিমদের একটা শেষ সুযোগ দিবো”।
তো, তিনি গিয়ে উপস্থিত হলেন সেই ইসলামিক সেন্টারে যেটা তার গুড়িয়ে দেয়ার ইচ্ছা ছিলো। তিনি সেখান থেকে একটা কুরআন নিয়ে গেলেন। পড়লেন। এমনকি, মুসলিম দের আটকানোর জন্য বিভিন্ন প্রশ্নও করলেন। মজার ব্যপার হলো, সেই লোকেরা তার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিতো। সবসময়। সেদিনের প্রায় দু’মাস পর তিনি সেই ইসলামিক সেন্টারেই ইসলাম গ্রহণ করেন।
তার বর্তমান অবস্থা জানতে চান?
তিনি এখন সেই ইসলামিক সেন্টারের প্রেসিডেন্ট।
“তারা পরিকল্পনা করে, আর আল্লাহও পরিকল্পনা করেন। বস্তুত, আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ পরিকল্পনাকারী।” [সুরা আনফাল, আয়াত ৩০]
দ্বীনের পথে ফিরে আসার গল্প ০১ : ২০০ মুসলিম খুন করার ইচ্ছা ছিলো যার!
কৃতজ্ঞতা: © Tahmid Islam
ক্রেডিট: মিম্বার(Mimbar)