কিছু সাধারণ নিয়ম রয়েছে যা প্রত্যেকের তাদের ওষুধের বৈধতা পরীক্ষা করার সময় অনুসরণ করা উচিত।
প্রথমত, সর্বদা ওষুধের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ পরীক্ষা করুন এবং মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এটি ব্যবহার করবেন না।
দ্বিতীয়ত, নিশ্চিত করুন যে আপনি আপনার ডাক্তারের দ্বারা নির্ধারিত সঠিক ডোজ ব্যবহার করছেন।
অবশেষে, আপনি যে বিভিন্ন ওষুধ গ্রহণ করছেন তার মধ্যে সম্ভাব্য মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকুন। আপনি যদি এই বিষয়গুলির কোনটি সম্পর্কে অনিশ্চিত হন তবে অনুগ্রহ করে কোন ওষুধ খাওয়ার আগে একজন ফার্মাসিস্ট বা আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন৷
ঔষধের মেয়াদ দেখার নিয়ম
সাধারণত সকলের ঔষধ এর প্যাকেট বা বক্স এর গায়েই মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেওয়া থাকে। তবে খুচরা পাতা হিসেবে বা পিস হিসেবে ঔষধ কেনার ক্ষেত্রে অনেকেই জানেন না কোথায় কিভাবে খুজে পাবেন মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ।
দোকান থেকে ঔষধ কেনার সময় হয় সম্পূর্ণ স্ট্রিপ বা ঔষধের পাতা কেনা বা খুচরা পাতা বা পিস হিসেব কেনার আগে দোকানদারের হাত থেকে নিয়ে চেক করুন। ঔষধের স্ট্রিপ এর গায়ে উপরে বা নিচের অংশে স্পষ্ট কিছু ইংরেজি সংখ্যা এবং অক্ষরে ওই ঔষধের মেয়াদ উত্তীর্ণের সময় কাল লেখা আছে।
ছবিতে লাল তীর চিহ্ন দিয়ে ইংরেজি “E” অক্ষরের পাশে মেয়াদ উত্তীর্ণের মাস এবং বছর দেয়া থাকে, এখানে “E” তে Expire বুঝানো হয়েছে, প্রথম দুটো সংখ্যা মাস কে বুঝায়, পরের দুটো সংখ্যা বছর বুঝায়, ধরুন দেওয়া থাকলো : E0221, মানে হলো এই ঔষধের মেয়াদ ২০২১ এর ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। অর্থাৎ E– মেয়াদের উত্তীর্ণ, 02– ২য় মাস তথা ফেব্রুয়ারি এবং শেষের 21– দ্বারা বুঝানো হয়েছে ২০২১ সাল। এইভাবে সব ঔষধের গায়ে মেয়াদ উত্তীর্ণের দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে, তাই কেনার পূর্বে তা দেখে নেওয়া উচিৎ।
ওষুধের মেয়াদ চেনার উপায়
ওষুধের বৈধতা পরীক্ষা করার সময় কয়েকটি মূল বিষয় দেখতে হবে। প্রথমত, সর্বদা ওষুধের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখটি পরীক্ষা করুন এবং যদি এটি সেই তারিখটি অতিক্রম করে থাকে তবে এটি ব্যবহার করবেন না। দ্বিতীয়ত, ওষুধটি সঠিকভাবে সীলমোহর করা হয়েছে এবং কোনোভাবেই এর সাথে কারচুপি করা হয়নি তা নিশ্চিত করতে ভুলবেন না। পরিশেষে, নিশ্চিত করুন যে আপনি যে কোনো ওষুধ গ্রহণ করেন তার জেনেরিক এবং ব্র্যান্ড নাম উভয়ের সাথেই আপনি পরিচিত যাতে আপনি সেগুলিকে সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারেন যদি সেগুলি কখনও জাল করা হয়।
মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ খেলে কি হয় জানুন
কোন ঔষধ কেনার সময় মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেখে নেই আমরা। যদিও জ্বর, কাশী বা ব্যথার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াও (OTC) কিছু ঔষধ কেনা হয় যা এক বছর বা দুই বছর পর্যন্ত ব্যবহার হয় না। সিরাপ বা কোন ট্যাবলেট খাওয়ার পূর্বে বেশিরভাগ মানুষই এর এক্সপায়ারি ডেট দেখে নেন। কিন্তু মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ খেলে কী হবে সেটাও নিশ্চয়ই অনেকে ভেবে থাকেন! চলুন তাহলে জেনে নিই মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ খেলে কী হয়।
OTC হোক বা চিকিৎসকের পরামর্শেই হোক প্রতিটা ঔষধেরই স্থায়িত্বকাল আছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, যদি কোন ঔষধ ১ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয় তাহলে এর মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেয়া হয় ৬ মাস পর্যন্ত। তাই আপনি যদি মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া ঔষধ গ্রহণ করেন তাহলে কোন স্বাস্থ্যগত জটিলতা সৃষ্টি করবেনা যেহেতু এর স্থায়িত্ব আছে। ঔষধের ধরণ ও উৎপাদনের উপর নির্ভর করে ঔষধ দুই বছর, তিন বছর বা পাঁচ বছর পর্যন্ত স্থায়ী থাকতে পারে। তবে মেয়াদ উত্তীর্ণের ঔষধ সেবন করলে এর কার্যকারিতা পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। এর কারণ সময়ের সাথে সাথে ঔষধের সক্রিয় উপাদানগুলোর রাসায়নিক পরিবর্তন হতে পারে, যা ক্ষতিকর হতেও পারে বা নাও হতে পারে।
ঔষধের দোকান থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণের ঔষধ কেনার সম্ভাবনা কম। কারণ ঔষধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে তা কোম্পানিকে ফিরিয়ে দেয়া হয় এবং তার বদলে নতুন ঔষধ আনা হয়। খুব তাড়াহুড়া করে ঔষধ গ্রহণ করলে এই ভুল হয়ে যেতেও পারে। অল্প মাত্রায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ সেবন করে ফেললে কোন সমস্যা হয় না। কিছু ক্ষেত্রে মাথাব্যথা, বমি বমিভাব, বমি হওয়া এবং পাকস্থলীর ব্যথা হওয়ার মত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়া খুব সাধারণ বিষয়।
মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ খেয়ে ফেলার পর যা করবেন-
ভুলবশত বা না জেনে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ খেয়ে ফেললে এর থেকে কোন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে কিনা তা চিকিৎসকের সাথে কথা বলে জেনে নিন। চিকিৎসক আপনার রক্ত পরীক্ষা করতে নির্দেশনা দেবেন। এছাড়াও ঔষধের ধরনের উপর নির্ভর করে যকৃৎ ও কিডনির উপর কোন প্রভাব পড়েছে কিনা তা জানার জন্য কিডনি ও লিভার ফাংশন টেস্ট ও করানোর নির্দেশনাও দিতে পারেন। তাই সব সময় ঔষধ গ্রহণের পূর্বে এর মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেখে নিতে ভুলবেন না।
সূত্র : দ্যা হেলথ সাইট