প্রথমেই সাইবার সিকিউরিটি কি এবং কেনইবা সাইবার সিকিউরিটি প্রফেশনালদের চাহিদা বাড়ছে তা বলে নেয়া যাক। বর্তমানের নানা ইলেক্টনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে আমরা অনেক ব্যক্তিগত, ব্যবসায়িক ও নানাবিধ তথ্য উপাত্ত অন্যান্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে ইন্টারনেটের মাধ্যমে শেয়ার করে থাকি। এসব তথ্য উপাত্ত যাতে কোনো দুষ্ট ব্যবহারকারী অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে না পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করাই সাইবার সিকিউরিটি প্রফেশনালদের কাজ।
সাইবার সিকিউরিটি কি? কত প্রকার ও কি কি? সাইবার নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা ও কিভাবে সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট হওয়া যায় এজন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান, pdf, কোর্স নিয়ে জানতে এই পোস্ট টি দেখুন:
যখন একজন ব্যবহারকারী বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস যেমন কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ট্যাব ইত্যাদির মাধ্যমে সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট
বা প্রাতিষ্ঠানিক বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইটে তথ্য আদান প্রদান বা শেয়ার করে থাকে তা অনেক ক্ষেত্রেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এসব গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি, তথ্য এবং ইন্টারনেটকে রক্ষা করার জন্য যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তাই সাইবার সিকিউরিটি ।
১.১: সাইবার নিরাপত্তা বা সাইবার সিকিউরিটি এর গুরুত্ব:
বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির সংযুক্তির মাধ্যমে ইলেকট্রনিক তথ্যের যে নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে তা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান (আর্থিক প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) কার্যকরভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এই ইলেক্ট্রনিক তথ্যের নেটওয়ার্কটি ব্যবহার করে থাকে । তারা বিপুল পরিমাণে ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, রক্ষণ এবং শেয়ার করে নেয়ার জন্য এই নেটওয়ার্কটি ব্যবহার করে।
যেহেতু এই ডিজিটাল তথ্যের ব্যবহার দিনে দিনে বাড়ছে, তাই এই ডিজিটাল তথ্যের সুরক্ষা আমাদের জাতীয় সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এই নেটওয়ার্ক সিস্টেমগুলি এবং সংশ্লিষ্ট সমস্ত তথ্য বা ডাটা অননুমোদিত ব্যবহারের হাত থেকে বা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার চলমান প্রচেষ্টাই হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি । ব্যক্তিগত পর্যায়ে আপনার পরিচয়, আপনার ডাটা, এবং আপনার কম্পিউটিং ডিভাইসগুলির সুরক্ষার দায়িতি আপনারই । কর্পোরেট পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানের খ্যাতি, প্রতিষ্ঠানের ডাটা, এবং গ্রাহকদের সুরক্ষা দেওয়া প্রতিষ্ঠানের সকলের দায়িত্ব । রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জাতীয় সুরক্ষা, নাগরিকদের কল্যাণ ও সুরক্ষা, রাষ্ট্রকে অবশ্যই গুরুতর সাথে বিবেচনা করতে হবে।
১.২: ব্যক্তিগত ডাটা:
আপনার নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, আপনার পরিচয় সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য সবই ব্যক্তিগত ডাটা। আপনার স্বাস্থ্যগত তথ্য, শিক্ষাগত তথ্য,
চাকুরিগত তথ্য, আর্থিক তথ্য এসবও আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের অন্তর্ভূক্ত ।
১.৩: অনলাইন এবং অফলাইন পরিচিতি:
বর্তমানে অনেকেই অনেক সময়় অনলাইনে ব্যয় করেন বা সময় কাটান। তাই আপনার এই অন্লাহন পরিচয় এবং অফলাইন পরিচয় উভয়ই আপনার জীবনকে প্রভারিতকরতে পারে। আপনার অফলাইন পরিচয় হল আপনার সেই পরিচয় যার দ্বারা আপনার পরিবার এবং বন্ধুরা প্রতিদিন বাড়িতে, স্কুলে বা কর্মস্থলে যোগাযোগ করে। তারা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন আপনার নাম, বয়স বা আপনি কোথায় থাকেন তা জানে । আপনার অনলাইন পরিচয় হল আপনার সেই পরিচয় যার ছারা আপনি অনলাইনে অন্যের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করেন। এই অনলাইন পরিচয়ে তথ্যের সুরক্ষার খাতিরে আপনার সম্পর্কে যথাসম্ভব সীমিত পরিমাণে তথ্য প্রকাশ করা উচিত। দেয়ার দরকার নেই সেসব জায়গায় বেশি তথ্য দেয়ার দরকার নেই। যেমন আপনি কোনো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে যখন আপনার পরিচয় দেবেন সেখানে আপনি সুন্দর ও উপযুক্ত একটি ইউজার নেম ব্যবহার করতে পারেন। দরকার না হলে জন্ম তারিখ দেয়ারও প্রয়োজন নেই। সোজা কথায় এমন পরিমাণ ব্যক্তিগত তথ্য আপনি সবার কাছে উন্ুক্ত করে দিবেন না যাতে করে
সাইবার অপরাধীরা আপনাকে সহজ টার্গেট মনে করে।
১.৪: আপনার ডাটা
আপনার সম্পর্কে যে কোনও তথ্য আপরার ডাটা হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। এই ব্যক্তিগত তথ্য স্বতন্ত্রভাবে আপনাকে পৃথক হিসাবে সনাক্ত
করতে পারে। আপনি অনলাইনে আপনার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সাথে যেসব চিত্র ও বার্তা বিনিময় করেছেন সেইসবও এই ডাটাতে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। যে সকল তথ্য আপনাকে সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয় বা বিশেষভাবে শুধু আপনি জানেন, যেমন_ আপনার নাম, আইডি নম্বর বা সামাজিক সুরক্ষা নম্বর, জন্ম তারিখ, জনাস্থান, আপনার ছোটবেলার নাম, এ সকল তথ্যও আপনার ডাটার অন্তর্ভক্ত।
আপনার মেডিকেল তথ্য, শিক্ষাগত তথ্য, আর্থিক তথ্য, এবং কর্মসংস্থানের তথ্যও অনলাইনে আপনাকে সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হতে পারে।
স্বাস্থ্যগত তথ্য:
আপনি যদি উন্নত বিশ্বের বাসিন্দা হন তবে আপনি ইলেক্ট্রনিক হেলথ রেকর্ড বা ইএইচআর এর সাথে পরিচিত। অথবা আপনি যদি ডিজিটাল হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা সম্বলিত কোনো হাসপাতালে যান সেখানেও আপনি ইএইচআর দেখতে পাবেন। বিভিন্ন সরকারি সুবিধা বা হেলথ ইন্সুরেন্সের সুবিধাদি পেতে এসব তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । প্রতিবার যখন আপনি ডাক্তারের কাছে যান আপনার ইএইচআর-এ আরও তথ্য যুক্ত করা হয়। আপনার পারিবারিক ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনটাও আপনার ইএইচআরের অংশ হয়ে যায়। আপনার ইএইচআরে আপনার শারিরীক স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য যা সরাসরি আপনার চিকিৎসার সাথে জড়িত নয় এমন তথ্যও থাকতে পারে ।
উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি কখনও শিশু বয়সে কাউন্সেলিং নিয়ে থাকেন তবে তাও আপনার মেডিকেল রেকর্ডে থাকতে পারে । আপনার
চিকিৎসার ইতিহাস এবং ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি আপনার পরিবার সম্পর্কেও নানান তথ্য আপনার ইএইচআরে অন্তর্ভূক্ত থাকতে পারে।
বর্তমানে অনেক ধরনের ইলেকট্রনিক চিকিৎসা সামথী পাওয়া যায় যার একটি হচ্ছে ফিটনেস ব্যান্ড। এই ফিটনেস ব্যান্ড আপনার হার্ট রেট, রক্তের
শর্করা, এবং রক্তচাপের মত ক্রিনিক্যাল তথ্যগুলো প্রদর্শন করে; এবং ওয়্যারলেস প্রযুক্তির মাধ্যমে সেই ভাটা কোনো ক্লাউড প্লাটফর্মে সংরক্ষণও
করতে পারে । এই ডিভাইসগুলির দ্বারা সংগৃহীত ও সংরক্ষিত প্রচুর পরিমাণের ক্লিনিক্যাল ডাটাও আপনার মেডিকেল রৈকর্ডের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
শিক্ষাগত তথ্য:
আপনার শিক্ষার অগ্রগতির সাথে সাথে আপনার গ্রেড, পরীক্ষার স্কোর সম্পর্কিত তথ্য, গৃহীত কোর্সগুলি, আপনার উপস্থিতির রেকর্ড, প্রাপ্ত ডিত্রী,
পুরষ্কার, এবং কোনো অনুশাসনের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্যাদি এসবই আপনার শিক্ষার রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে । এই রেকর্ডের মধ্যে যোগাযোগের তথ্য, স্বাস্থ্য এবং টিকাদানের রেকর্ড, এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রোগ্রামগুলিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
আর্থিক এবং চাকুরিগত তথ্য:
আপনার আর্থিক রেকর্ডে আপনার আয়-ব্যয় সম্পর্কিত তথ্য অন্তর্ভূক্ত থেকে থাকে । আয়কর রেকর্ডে পেচেক স্টাৰ (০৪০০1 6৮9), আপনার
ক্রেডিট রেটিং, ক্রেডিট কার্ডের স্টেটমেন্ট, এবং অন্যান্য ব্যাংকিং তথ্যাদি।
অন্তর্ভূক্ত থাকতে পারে। আপনার কর্মসংস্থান সম্পর্কিত তথ্যাদির মধ্যে আপনার অতীত কর্মসংস্থান এবং বর্তমান কর্মসংস্থান সম্পর্কিত তথ্যাদি অন্তর্ভূক্ত থাকতে পারে।
ডাউনলোড করে নিন সাইবার সিকিউরিটি PDF link
best Cyber Security Pdf in Bengali book download link:
The Postmortem of Cyber Security pdf
পিডিএফ বই হতে ডেমো ইমেজ
সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিতে জানুন আপনার ব্যক্তিগত ডাটা কোথায় থাকে?
আপনার সম্বন্ধে বিভিন্ন রকমের তথ্যের কথা বলা হয়েছে । আপনি বিভিন্ন সময়ে এসব তথ্য অনলাইনে ব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন দেশে তাদের
নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং তথ্য রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন আইন রয়েছে। কিন্তু আপনি জানেন কি যে আপনার ডাটা কোথায়?
আপনি যখন ডাক্তারের চেম্বারে গিয়েছেন এবং তার পরামর্শ নিয়েছেন তখন কথোপকথনটি আপনার মেডিকেল চার্টে রেকর্ড করা হয়েছে।
সঠিকভাবে ডাক্তার বা হাসপাতালের বিল পরিশোধের জন্য আপনার এইসব তথ্য সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানির সাথে শেয়ার বা ভাগ করা হতে পারে। সুতরাং, আপনার চিকিৎসার তথ্য ডাক্তারের কাছে যেমন রয়েছে তেমনি বীমা কোম্পানির কাছেও রয়েছে।
আপনি যখন বড় কোনো ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে যান তখন এঁ স্টোরের মেম্বারশিপ কার্ড বা স্টোর লয়্যালর্টি কার্ড ব্যবহার করে অর্থ সাশ্রয় করে
থাকেন। এরজন্য স্টোরটি আপনারাক্রেয়ের একটি প্রোফাইল সংকলন করছে, এবং সেই তথ্যগুলো তাদের নিজস্ব প্রয়োজনে ব্যবহার করছে। প্রোফাইলটি
দেখায় যে ক্রেতা নিয়মিত কোন টুথপেস্টের কোন ব্রান্ড এবং স্বাদ কিনেছেন? এই টুথপেস্ট কোম্পানির বিশেষ অফার ক্রেতাকে জানাতে স্টোরটি লয়্যালটি
কার্ড বা মেম্বারশিপ কার্ডে সংরক্ষিত তথ্য ব্যবহার করতে পারে। গ্রাহকদের ক্রয়-আচরণ অবলোকন করার জন্য ক্রয়ের তথ্য স্টোরটি এবং সংশিষ্ট বিপণন সংস্থাটি প্রোফাইলের মাধ্যমে তা সংরক্ষণ করতে পারে।
আপনি যখন অনলাইনে আপনার ছবিগুলো আপনার বন্ধুবান্ধবের সাথে শেয়ার করেন, তখন আপনি কি জানেন যে ছবিগুলোর কোন অনুলিপি
থাকতে পারে? ছবিগুলোর অনুলিপি আপনার নিজের ডিভাইসে রয়েছে। আপনার বন্ধুবান্ধবের কাছে সেই ছবিগুলোর কপি থাকতে পারে, তারা তা
সহজেই ডাউনলোড করে রাখতে পারে । ছবিগুলো যদি সর্বজনীনভাবে শেয়ার করা হয়ে থাকে, তবে অনেক অপরিচিতজনও তা ডাউনলোড করে রাখতে পারে। তারা ডাউনলোড করার মাধ্যমে অথবা স্ক্রিনশট নেওয়ার মাধ্যমেও ছবির কপি রেখে থাকতে পারে ।