Title | গর্ভধারিণী – gorvodharini pdf |
Author | সমরেশ মজুমদার pdf – samaresh majumdar books pdf |
Publisher | মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রাঃ লিঃ (ভারত) |
ফাইল ফরম্যাট: | Pdf free Download(পিডিএফ ডাউনলোড) |
Edition | 47th Edition, 2015 |
Number of Pages | 384 |
Country – credit | ভারত –Hashemi Asif Apon |
Language | বাংলা |
গর্ভধারিণী
জয়িতা, সুদীপ, আনন্দ আর কল্যাণ চার বন্ধু যাদের মন ও মানসের মোটেও উপযোজন ঘটছে না তৎকালীন সমাজের সাথে।
কেমন ছিল তৎকালীন মেকী সমাজ? কি ছিল তাদের এই মেকীর সংজ্ঞা? আজকের সমাজ থেকে তেমন পার্থক্য দেখি না সেই মেকী সমাজের। শুধু পার্থক্য এই যে, তাদের সময় আট ঘন্টা খাটুনির সাথে চার পাঁচ ঘন্টা ট্রাফিক সহ্য করা লাগতো না হয়তো। কিন্তু দিন/সপ্তাহ শেষে একটু বিনোদনের আশায় মায়া-সামাজিকতা মেনে চলা, বিত্তের চাকচিক্য প্রদর্শনীর অনুষ্ঠানিকতায় পরিপূর্ণ লাল পানীয়ের গ্লাস, কিংবা আরো কিছুটা উত্তেজনা আর এডভেঞ্চারের স্বাদ এনে দিতে দু-চারটা পরকীয়া? – এই তো, এসবই হচ্ছে এখনকার সমাজের সংজ্ঞা যার শুরু হয়েছিল ভারতবর্ষে রেনেসাঁর আবির্ভাবের পর। যে সমাজে হারিয়ে গেছে সত্যিকারের রোমাঞ্চ; যার বদলে ঠাঁই পেয়েছে ভেজাল-বিনোদন।
কিন্তু তারুণ্যের উদ্দীপনায় রক্ত গরম ‘ডিফারেন্ট’ গোছের কিছু তরুণ-তরুণী যখন মেনে নিতে পারলোনা এসব; একই সাথে অভিজ্ঞতার ঝুলি আর দূর-দর্শনের অভাবে আচমকা করে বসলো কোন ধরণের বিদ্রোহী কর্মকাণ্ড কিংবা সন্ত্রাসী হামলা; তখন তাদের নাম হয়তো ‘সমাজ-প্রতিবাদীদের’ পরিবর্তে ‘এটেনশন সিকার’ আর ‘টেরোরিস্টদের’ খাতায় নাম উঠে, যেমনটা ঘটেছে এই উপন্যাসেও।
তরুণ বয়সের কিছু উদ্দীপনা, পরিবর্তনের চেষ্টায় যে ব্যাকুলতা তার ছাপ চরিত্রগুলোর প্রতি ডায়ালগে, জীবন কাহিনীতে। হঠাৎ খুঁজে পাওয়া রেনেসাঁর স্পর্শে সব ভেদাভেদ দূর করার প্রচেষ্টায় মত্ত এই চার তরুণ-তরুণী। তারা মানবে না কোন ভেদাভেদ; হোক সেটা ধনী-গরীবের, হোক সেটা নারী-পুরুষের।
কিন্তু এরা তো মাত্র বিকশিত হওয়া তরুণ-তরুণী; যারা রক্ত গরমের নেশায় পরিবর্তন চায়। তারা তো আর মাসুদ রানার মতো এক্সপার্ট স্পাই কিংবা অভিজ্ঞতার ঝুলিতে পরিপূর্ণ হার-না-মানা বিপ্লবী কুয়াশার মতো না। তাই দ্রুতই তাদের নিঃশেষিত রিসোর্সের সাথে সাথে ভাটা নেমে এলো বিপ্লবী চেতনায়ও। হারিয়ে গেলো তাদের এককালের উত্তেজনায় পূর্ণ উদ্দেশ্য। এক সময় হয়তো ভুলে যাবে সমাজ তাদের নামগুলোও।
চরিত্র বিশ্লেষনঃ
জয়িতা – নারীবাদী; কিন্তু তার নারীবাদে অনেক টিপিক্যাল চেতনা। জয়িতা সেই শ্রেনির নারীবাদী যারা শক্ত নারী না হয়ে একবারে পুরুষই হতে চায়, এমনটাই মনে হয়েছে আমার। কিন্তু শেষ দিকে তাকে অবশ্য শক্তিশালী নারীতে পরিণত হতে দেখা যায়। সে বুঝতে পারে তার কি করা উচিৎ।
সুদীপ – এই চরিত্রটা এমন যাদের বেঁচে থাকার জন্য খুব ভালো/যোগ্য উদ্দেশ্য লাগে। উদ্দেশ্য হারিয়ে গেলে তাদের বেঁচে থাকার ইচ্ছেও শেষ হয়ে যায়। অনেক গভীর চেতনা সম্পন্ন মানুষ, কিন্তু শেষমেশ সেই চেতনার শক্তিকে কাজে লাগাতে পারে না।
আনন্দ – গ্রুপে দায়িত্ব নেবার ক্ষমতা রাখা একটা চরিত্র।
কল্যাণ – দুর্বল চরিত্র, যে কিনা কিছু করে দেখাতে উৎসুক। ইনফেরিয়র কমপ্লেক্সে ভুগছে সবসময়ই।