Thakurmar Jhuli pdf free download – Bangla Rupkothar Golpo pdf free download
- বইয়ের নামঃ ঠাকুরমার ঝুলি
- লেখকঃদক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার
- বিষয়বস্তুঃ রুপকথা
- প্রকাশনায়ঃ প্রিয়মুখ প্রকাশনী
- রিভিউকারীঃফারহানা ফেরদৌসী
ঠাকুরমার ঝুলি রাক্ষসের গল্প pdf –
book | ঠাকুরমার ঝুলি – সোনার কাঠি রুপার কাঠি |
Editor | ডব্লিউসিবি |
Publisher | ওয়ার্ল্ড অব চিলড্রেন’স বুকস লিমিটেড |
Edition | 1st Published, 2007 |
Number of Pages | 165 |
Country | বাংলাদেশ |
Format | Free Bangla Pdf book Download (পিডিএফ ডাউনলোড), epub, kindle MOBI |
এক যে ছিলো রাজা,তার ছিলো রানী,এক যে ছিলো ব্যঙ্গমা ওব্যঙ্গমী,অথবা এক দুঃখীনি রানীর ছিলো না কোনো সন্তান — এরকম আবেগ সৃষ্টি করে প্রতিটি রুপকথার গল্প শুরু হতো। যাতে সকলের মনোযোগ ব্ক্তার দিকে ধাবিত হয়।চিরায়ত বাংলার গ্রামীন অবসরের সময় এই রুপকথা গুলো ছিলো বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম। সেই সাথে চলতো জারী,পুঁথি,পালাগান। লেখক দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার সেই রকম আবহে রচনা করেছেন “ঠাকুরমার ঝুলি”।
লেখক পরিচিতিঃ দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার ১২৮৪ বাংলা সনের ২ রা বৈশাখ ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার উলাইল এলাকার কর্ণপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম রমদা রঞ্জন মিত্র মজুমদার, মাতার নাম কুসুমময়ী।তিনি ছিলেন প্রখ্যাত বাংলা ভাষার রুপকথার রচয়িতা ও সংগ্রাহক।তাঁর সংগৃহীত জনপ্রিয় রুপকথার সংকলনটি চারটি খন্ডে প্রকাশিত হয়।যথাঃ ঠাকুরমার ঝুলি, ঠাকুরদাদার ঝুলি,ঠানদিদির থলে, দাদা মশাইয়ের থলে। ১৩৬৩ সালের ১৬ চৈত্র তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
ঠাকুরমার ঝুলির ধরণঃ যদিও এককথায় বলা যায় বইটি রুপকথার গল্প। কিন্তু এই রুপকথার মাঝে ও রয়েছে সামাজিক বিধি নিষেধ, জাত কুল ব্যবধান,হিংসা বিদ্বেষ, সুন্দর অসুন্দর বিচার।আবার অন্যদিকে রয়েছে সততার প্রতিদান।ধৈর্যের ফল,সুবিচারের দৃশ্য, ঈশ্বরের ধ্যান ইত্যাদি।সর্বোপরি সততার জয় চিরকাল হয় এমন প্রতিপাদ্য বিষয় ফুটে উঠেছে এই বইয়ে।
বইটি রচনার উৎসঃ দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার তখন গ্রাম বাংলার প্রবীনদের কাছ থেকে,দাদা দিদিমা থেকে এই গল্পগুলো সংগ্রহ করেন।তৎকালীন সময় সারাদিনের কর্মব্যস্ততার পর বাড়ীর সবাই উঠানে পাটি পেতে গোল হয়ে বসতেন।যিনি গল্প বলায় পটু তাকে সমাদর করে বসানো হতো। সাথে থাকতো পানের বাটা,তামাক দেয়া হুকো। এসব থেকে শুনে শুনে গল্প গুলো লেখক সংগ্রহ করেন। এর পর মনের মাধুরী দিয়ে রচনা করেন ঠাকুরমার ঝুলি। সেইসাথে নিজেই অংকন করেন গল্পের ছবি।
বইটিতে কি কি আছেঃ
এই বইয়ে শিশুদের উপযোগী করে তোলার জন্য কাল্পনিক দৃশ্য সম্বলিত অনেক দৃশ্য বর্ণিতহয়েছে যা শিশুমনে কল্পনা করার ভাব জাগ্রত হয়।গল্প গুলো হলোঃ
- দুধের সাগর
- কলাবতী রাজকন্যা
- ঘুমন্ত পুরী
- কাঁকনমালা কাঞ্চনমালা
- সাতভাই চম্পা
- শীত-বসন্ত
- কিরণ মালা
- রুপতরাসী
- নীলকমল আর লাল কমল
- ডালিমকুমার
- পাতাল কন্যা মনিমালা
- সোনার কাঠি রুপার কাঠি
- চ্যাংব্যাং
- শেয়াল পন্ডিত
- সুখু আর দুখু
- ব্রাহ্মন আর ব্রাহ্মনী
- দেড় আঙ্গুলে
- আমসন্দেশ
- ফুরাল
গল্পগুলোর মূলভাবঃ প্রতিটি গল্পেই রয়েছে রাজা রানী, প্রজাদের নিয়ে।রাজ প্রাসাদের বর্ণনা,হাতিশালে হাতি,ঘোড়াশালে ঘোড়া,হীরা,মানিক,মুক্তা এসব পাঠকালে চোখের সামনে দৃশ্যমান হয়ে উঠে। পাতালপুরী না জানি কেমন,কিন্তু লেখকের বর্ণনায় পাতালপুরী ও যেনো জীবন্ত। রাক্ষস খোক্ষস যে কি বীভৎস, কত যে তাদের ক্ষমতা, তাদের কারনে সব বিরানভূমি হয়ে যায়, এসবই নিখুঁতভাবে বর্ননা করা হয়েছে।
সৎমা চিরকালই খারাপ, এইবইয়ের প্রায় প্রতিটি গল্পে ফুটে উঠেছে।
যে গল্পগুলো শিশুদের বেশি মন কাড়ে তার মধ্যে সাত ভাই চম্পা – একটি।এই গল্পে রাজার ছয় রানী ষড়যন্ত্র করে ছোট রানীর সাতছেলে ও এক মেয়েকে মাটি চাপা দিয়ে ফেলে। সেখানে সাতটা চাঁপা ও একটি পারুল ফুল হয়।রাজা এসব কিছুই জানতেন না।একদিন সব বেরিয়ে আসে।অবশেষে ছোটরানীকে বরণ করা হয়। বাকি ছয় রানীকে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।এই গল্প থেকে শিশুরা ষড়যন্ত্রের কুফল সম্পর্কে অবগত হবে।গল্প টি এত জনপ্রিয়তা পায় যে,পরবর্তীতে এটা দিয়ে সিনেমা তৈরি হয় এবং বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে।
কিরণমালাঃকিরনমালা গল্পে যদিও সৎমায়ের চরিত্র ছিলোনা,কিন্তু দুবোনের ষড়যন্ত্রের শিকার হয় বড় বোন।ছেলে মেয়ের বদলে বিড়াল ছানা,কুকুর ছানা,কাঠের পুতুল জন্ম হয়েছে বলে রাজাকে জানানো হয়।অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে অবশেষে সবার মিলন ঘটে।
ডালিমকুমারঃ ছোটবেলায় ডালিমকুমার গল্প শুনেনি এমন শিশু পাওয়া যাবে না।পঙ্খী রাজ ঘোড়ায় চড়ে কঙ্কাবতীকে উদ্ধার এ যেনো মৃত্যুর মুখে পতিত হওয়া।
কলাবতী রাজকন্যাঃ এই গল্পে রাজার সাত রানীর কোনো ছেলে মেয়ে নাই।সন্ন্যাসীর শিকড় নিয়ে চলে ষড়যন্ত্র। কে বেশি খাবে,আর সন্তান সম্ভবা হবে।ছোট রানী শিকার হন ষড়যন্ত্রের। শীল নোড়া ধুয়ে শিকড়ের সামান্য তম অংশ খেলেন।সবার সুন্দর পুত্র সন্তান হয়,কিন্তু ন রানী ও ছোটরানীর হয় এক পেঁচা ও এক বানর।ধৈর্য ও ভালোবাসার কাছে অবশেষে সবার ষড়যন্ত্র প্রকাশ পায়।
কাঁকনমালা ও কাঞ্চনমালাঃরাজপুত্র আর রাখাল ছিল বন্ধু। একসময় তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। রানী কাঞ্চনমালা এক রাক্ষুসির চক্রান্তে দাসী হয়ে যায়। দীর্ঘ সাধনার পর সেই রাখাল বন্ধুর সাহায্যে সব আগের মত হয়।এই গল্পে ও ধৈর্যের পরীক্ষার ফল পাওয়া যায়।
এরকম বাকি সব গল্পেই প্রায় একই ধাঁচের রাজা রানী,রাক্ষস খোক্কস, পাতালপুরী, ব্যঙমা ব্যঙমী, বিদ্যমান।শিশুরা পরম আগ্রহ নিয়ে এসব বর্ণনা শুনতো।
আমার অভিমতঃ আমরাও এক সময় এই ঠাকুরমার ঝুলি পড়েছি। অন্যকে শুনিয়েছি।বন্ধুরা সবাই বৃষ্টির দিনে অথবা চাঁদনি রাতে উপভোগ করেছি এই ঠাকুরমার ঝুলি। ঠাকুর মা’ ই বেশির ভাগ সময় গল্প গুলো শুনাতেন।এজন্য তাদের হাতে পায়ে ধরে, তাদের কাজগুলো করে আমরা গল্পের সুযোগ করে নিতাম।সেই অর্থে বইটির নাম ” ঠাকুরমার ঝুলি ” যথার্থ।বর্তমানে এমন আবহে গল্প বলা হয়না বলেই দূরত্ব বেড়েছে দাদা-দাদীর সাথে নাতি নাতনিদের।
পরিশেষে লেখকের ভাষায় বলছি-
আমার কথাটি ফুরা’ লনটে গাছটি মুড়ালকেন রে নটে মুড়ালি?গরুতে কেন ঘাস খায়।
আনন্দময় শৈশবের একটি বিনোদন মূলক গল্প কথন “ঠাকুরমার ঝুলি ” র লেখক দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার কে ধন্যবাদ,এমন একটা বই রেখে গেছেন বলে।শুধু শিশুদের কথা বলব না,সে সময়ে বড়রাও অলস দুপুরে বইটি নিয়ে শুয়ে শুয়ে পড়তেন। সে থেকে যে জনপ্রিয়তা অনুমান হয় তাতে বইয়ের লেখক কে ও বইটিকে আমি ১০/ ১০ দেব।
Thakurmar Jhuli Golpo in Bengali pdf free download